'রোহিঙ্গাদের আগমন পরিবেশের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব পড়েছে'
![]() |
https://tmnews24patuakhali.blogspot.com/ |
জাতিসংঘে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উত্থাপিত পাঁচদফা প্রস্তাবনাই হতে পারে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে সবচেয়ে কার্যকর উপায় বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, মিয়ানমারের নাগরিক রোহিঙ্গারা গূরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার হয়েছে।
মানবাধিকার ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠাতে হবে।
বিশ্ব মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার বিকালে রাজধানীর ধানমন্ডিতে ‘বিলিয়া’ মিলনায়তনে বাংলাদেশ জাতিসংঘ সমিতি (ইউন্যাব) আয়োজিত ‘ইউনিভার্সাল হিউম্যান রাইটস এ্যান্ড রোহিঙ্গা ক্রাইসিস’ শীর্ষক আলোচনাসভায় তারা এসব কথা বলেন।
ইউন্যাব-এর সভাপতি বিচারপতি কাজী এবাদুল হকের সভাপতিত্বে এবং সংগঠনের মহাসচিব অধ্যাপক সৈয়দ মোহাম্মদ শাহেদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন এমিরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান, প্রখ্যাত আইনবিদ ব্যারিস্টার এম. আমির-উল-ইসলাম, সাবেক প্রধান তথ্য কমিশনার ও আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামন্ডলীর সদস্য মোহাম্মদ জমির এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুবউজ্জামান।
মিয়ানমারের ঐতিহাসিক ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট তুলে মোহাম্মদ জমির বলেন, রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠি দীর্ঘদিন যাবৎ তাদের নাগরিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তারা বিভিন্নভাবে নির্যাতন ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার হচ্ছেন। মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের বিষয়টি বাংলাদেশ সরকার মানবিকভাবে বিবেচনা করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘জাতিসংঘে প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনার উত্থাপিত পাঁচদফা প্রস্তাবনাই হতে পারে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে সবচেয়ে কার্যকর উপায়।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের জন্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশ বা সংস্থার পাঠানো আর্থিক সহায়তা বা ত্রান জাতিসংঘের কাছে আসছে এবং জাতিসংঘের মাধ্যমেই তা ব্যবহৃত হচ্ছে। সাবেক রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জমির বলেন, বাংলাদেশ সরকার সামর্থ্য অনুযায়ি রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তা করছে।
মিয়ানমারের রোহিঙ্গা সংখ্যালঘুরা নির্মম নির্যাতন ও জাতিগত শুদ্ধি অভিযানের শিকার হচ্ছেন উল্লেখ করে ব্যারিস্টার আমির-উল-ইসলাম বলেন, রোহিঙ্গাদের মানবাধিকারই লঙ্ঘিত হচ্ছে না, বরং তাদের উপর গনহত্যা চালানো হচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘গণহত্যার দায়ে মিয়ানমারের সরকারকে আন্তর্জাতিক আদালতে বিচারের মুখোমুখি করা যায়’।
রোহিঙ্গা সমস্যাকে একটি মানবিক সংকট হিসাবে উল্লেখ করে এমিরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেন, মিয়ানমার সরকার ইতিহাসকে অস্বীকার করছে, সেখানে গনহত্যা ও বাস্তুচ্যুতি
ঘটছে। বাংলাদেশ তার সীমিত সামর্থ্য নিয়ে মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের দেখাশোনা করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ এ বিষয়ে একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন আয়োজন করতে পারে’।
বিদ্যমান পরিস্থিতিতে রোহিঙ্গাদের কাছে মিয়ানমারের কোন পরিচয়পত্র নাই উল্লেখ করে তিনি বলেন, কোন শর্ত দিয়ে নয়, বরং মানবিক দিক বিবেচনা করেই সমস্যার সমাধান করতে হবে। মিয়ানমার সরকার সহযোগিতা না করলে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন কঠিন হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুবউজ্জামান বলেন, ‘সরকার মিযানমারের সাথে আলোচনা করছে, পাশাপাশি দেশটির উপর আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে চাপ অব্যহত রাখতে কূটনৈতিক তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। এতে সফলতাও আসছে’। জাতিসংঘে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উত্থাপিত পাঁচদফা প্রস্তাবনাকে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে সবচেয়ে কার্যকর উপায় হিসাবে তিনি উল্লেখ করেন।