Header Ads

দুর্নীতির আতুর ঘর পটুয়াখালী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি?

TMNews24.
পটুয়াখালীতে গ্রামীণ জনপদের ঘরে ঘরে পল্লী বিদ্যু সংযোগে গ্রাহকদের কাছ থেকে দফায় দফায় কোচ নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। পল্লী বিদ্যু সমিতি এলাকা পরিচালক থেকে শুরু করে জেলা-উপজেলা পর্যায়ের পল্লী বিদ্যু সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং জনপ্রতিনিধি, শিক্ষকসহ বিশাল একটি চক্র কোচ বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত। কয়েকদিনের অনুসন্ধানে এমন তথ্য বেড়িয়ে এসেছে। বিলাস দাসপটুয়াখালীTMNews24.

সদর উপজেলার মধ্য মৌকরণ এলাকার বাসিন্দা হাসিনা বেগম, ছকিনা বেগম, আবদুল বারেক মাঝিসহ একাধিক গ্রাহক অভিযোগ করে বলেন, সংশ্লিষ্ট মহিলা ইউপি সদস্য কহিনুর রেজভি বিদ্যুসংযোগ দেয়ার জন্য অফিসের খরচ বাবদ তাদের কাছ থেকে দুই দফায় গ্রাহকপ্রতি - হাজার টাকা নিয়েছে। এছাড়া তাদের কাছ থেকে ঠিকাদারের লোকজন শ্রমিকের খাওয়া থাকা বাবদ প্রতি গ্রাহকের কাছ নগদ ২শটাকা এবং দুই কেজি করে চাল উত্তোলন করেছে। কোনো গ্রাহক বিষয়ে আপত্তি জানালে, বিদ্যুসংযোগের তালিকা থেকে তাদের নাম কেটে দেয়ার ভয় দেখানো হয়। একই এলাকার জিহাদ মাঝি জানান, তাদের বাড়ির ৩০টি ঘর থেকে গ্রাহকপ্রতি অফিস খরচ বাবদ হাজার টাকা, শ্রমিক খরচ বাবদ দুই কেজি চাল এবং ২শটাকা করে নিয়েছে ইউপি সদস্য কহিনুর রেজভি। বিষয়ে ইউপি সদস্য কহিনুর রেজভির সঙ্গে মোবাইল ফোনে জানতে চেয়ে টাকার কথা উঠালে ফোনের লাইট কেটে দিয়ে তিনি ফোনটি বন্ধ করে দেন।

এদিকে অনুসন্ধানে জানা গেছে, সদর উপজেলার বদরপুর খলিসাখালীর ৫নং ওয়ার্ডে সাবেক ইউপি সদস্য শাহ আলমসহ একটি চক্র বিদ্যুসংযোগ দেয়ার নামে প্রতি ঘর থেকে পাঁচ থেকে হাজার টাকা নিয়েছে। অনুসন্ধানকালে যুগান্তর প্রতিনিধি তার পরিচয় গোপন করে সাবেক ইউপি সদস্য শাহ আলমের সঙ্গে নতুন বিদ্যুসংযোগের আলাপচারিতায় তিনি বলেন, একটি বাড়িতে নতুন লাইন নিতে হলে ইঞ্জিনিয়ার এনে ম্যাপ করা, অফিস খরচসহ নানা খরচ বাবদ ২০ হাজার টাকা লাগবে। কেন দিতে হবে এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, অফিসের একাধিক টেবিলে খরচ আছে। যে টাকা দেবে তার বাড়িতে আগে খুঁটি পড়বে, যে না দেবে তার বাড়িতে খুঁটি পড়বে না।

অনুসন্ধানে আরও জানা গেছে, গলাচিপা উপজেলার নলুয়াবাগী ইউনিয়নে বিদ্যুসংযোগের নামে পাঁচ শতাধিক গ্রাহকের কাছ থেকে হাজার থেকে হাজার পর্যন্ত দফায় দফায় উঠানো হয়েছে। আর কোচ উত্তলোনে জড়িত রয়েছে বাদুরা নতুনচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মহিউদ্দিন আবদুল জলিল তার সহযোগী ফয়সাল গং, নলুয়াবাগি দাখিল মাদ্রাসার সুপার আবু বকর শিক্ষক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন, নলুবাগী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আবদুল মান্নান, প্রাক্তন শিক্ষক শাহজাহান মিয়া, বাদুরা , মহিলা ইউপি সদস্য হোসনেয়ারা লোকমান ওরফে ডাক্তার লোকমান ফিরোজ মাতবর, এবং গোলখালী ইউনিয়নের বলইবুনিয়ার মজিবুল হক বিদ্যুসংযোগের নামে গ্রাহকদের কাছ থেকে হাজার টাকা উত্তোলন করেছেন। বাদুরা বাজারের চালের মিল মালিক সিদ্দিক ফকির জানান, তার মিলে সংযোগ দেয়ার জন্য ৬০ হাজার টাকা দিতে হয়েছে। টাকা উত্তোলনকারী চক্রটির ইউপি সদস্য কহিনুর রেজভি, শাহজাহান মিয়ার সঙ্গে যোগযোগ করা হলে তারা জানান, সংশ্লিষ্ট পল্লী বিদ্যুসমিতির পরিচালকের নির্দেশে টাকা ওঠানো হয়েছে। দশমিনা উপজেলায় গ্রাহকের কাছে দফায় দফায় মিটারপ্রতি থেকে হাজার টাকা উঠিয়েছে সংশ্লিষ্ট ইলেকট্রিশিয়ান আবু সাইদ। আনন্দ মেলা সিনেমা হল এলাকার নাসির উদ্দিনের ছেলে মো. জাহিদুল ইসলাম জানান, তার কাছ থেকে আবু সাইদকে দুটি মিটার বাবদ ১৬ হাজার টাকা দিতে হয়েছে। পটুয়াখালী জেলা পল্লী বিদ্যুসমিতির জেনারেল ম্যানেজার মনোজ কুমার বিশ্বাস জানান, প্রধানমন্ত্রী প্রতিশ্রতি অনুযায়ী ২০১৮ সালের মধ্যে ঘরে ঘরে বিদ্যুসেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে পল্লী বিদ্যুকাজ করে যাচ্ছে। সদস্য ফি মাত্র ৫০ এবং মিটার বাবদ ৪৫০ টাকা নির্ধারণ রয়েছে। এছাড়া সরকার গ্রাহকের কাছ থেকে কোনো অর্থ নিচ্ছে না। মাঠপর্যায়ে একটি চক্র মিথ্যা কথা বলে গ্রাহকদের কাছ থেকে টাকা ওঠাচ্ছে। এমন অভিযোগ আমাদের কাছে এসেছে। বিষয়ে তদন্ত চলছে এবং চক্রটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।  




 বিলাস দাসপটুয়াখালী  TMNews24.




Blogger দ্বারা পরিচালিত.