কি করুণ পরিণতি, কেন এমন হল ?? জানলে আতকে উঠবেন
কি করুণ পরিণতি - সময়টা ৮০ র দশকে। সে সময়ে তিনি ছিলেন পর্দা কাঁপানো অভিনেত্রী। ভারতের দক্ষিণী (তামিল) সিনেমার জনপ্রিয় নায়িকা নিশা নুর। পর্দায় সাবলীল অভিনয় আর মিষ্টি চেহারার সুবাদে লাখো পুরুষের স্বপ্নে ছিলেন এই নায়িকা ।
তামিল এবং মালয়ালি সিনেমার সুপারস্টার রজনীকান্ত এবং কমল হাসানের সঙ্গে বহু সিনেমায় অভিনয় করেছেন নিশা। সর্বশেষ আইয়ের দ্য গ্রেট (১৯৯০) নামের একটি সিনেমায় অভিনয় করে সাড়া ফেলেছিলেন তিনি। এরপর ধীরে ধীরে হারিয়ে যান সবার অন্তরালে । সময়ের স্রোতে একসময় ভুলে যায় সবাই। টিক টিক টিক (১৯৮১), কল্যাণা আগাথিগাল (১৯৮৬) এবং আইয়ের দ্য গ্রেট (১৯৯০) সিনেমার জন্য বিশেষভাবে পরিচিত ছিলেন এই অভিনেত্রী। পরিবারের আপনার অ্যান্ড্রয়েড চালাতেই নাকি তিনি পতিতাবৃত্তিতে নামতে বাধ্য হয়েছিলেন।
অথচ মৃত্যুর সময় তার পাশে দাঁড়াননি তাঁর পরিবার ও বন্ধুরা। মৃত্যু পর রাস্তা থেকে উদ্ধার হয় তার কঙ্কালসার লাশ। হায়, ভাগ্যের কী নিদারুণ পরিহাস!
সুত্রমতে ২০০৭ সালে এইডসে আক্রান্ত হয়ে দীর্ঘদিন ভোগার পর বিনা চিকিতসায় করুন মৃত্যু হয় তাঁর। আর দশটা সাধারন খবরের মতই অন্তরালে চলে যায় তার মৃত্যুর খবর। যে পুরুষরা তাকে নিয়ে রঙিন স্বপ্ন দেখতেন তারা নিশার এই চেহারা দেখলে আঁতকে উঠবেন। সুত্র বলছে, ব্যক্তিগত জীবনে প্রচন্ড জেদি ও অভিমানী ছিলেন এই নায়িকা। ১৯৯০ তে সর্বশেষ সিনেমায় অভিনয়ের পর তার মায়ের মৃত্যু হয়। এরপর ধীরে ধীরে মিডিয়া অঙ্গন থেকে নিজেকে গুটিয়ে ফেলেন তিনি। সে সময় না কি সিনেমায় লগ্নিকারী এক ধনাঢ্য ব্যবসায়ী প্রেমে পড়েছিলেন নিশা নুর। এরপর ভালোবেসে প্রেমিকের কথা রাখতেই সিনেমার জগত ছেড়ে দেন পুরোপুরি।
তবে ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে সেই প্রেমিকের কাছে প্রতারণার শিকার হন কিছুদিন পরেই। নিশা বুঝতে পারে 'তাকে শুধু ভোগ করাই উদ্দেশ্য ছিলো কথিত প্রেমিকের'। এরপর জেদ আর অভিমানে পুরাতন জীবনেও ফেরা হয়নি তার। নিঃসঙ্গ জীবন কাটাতে অভ্যস্ত হয়ে পড়েন সেসময় । অভিযোগ আছে সেই প্রেমিকের ব্লাকমেইলিং এর শিকার হয়ে একসময় তাকে অন্যজনের বিছানায় যেতে বাধ্য করা হয়।
প্রকাশিত বিভিন্ন সংবাদ সুত্র বলছে, সিনেমার জগৎ ও প্রেমিকের কাছে প্রতারনার শিকার হবার পর সব ছেড়ে একসময় দারুন অভাবের মুখোমুখি হয়ে পড়েন তিনি
। বিলাসী জীবন কাটানো সেই নিশা নুর বাস্তবতার কষাঘাতে প্রথম কিছুদিন ধনাঢ্য ব্যবসায়ীদের সাথে সখ্যতা বাড়িয়ে তাদের মনোরঞ্জন করে চলছিলো নিশা। পরে সময়ের স্রোতে হারাতে থাকে নিজের ক্রেজ। বাড়তি চাহিদা ও পরিবারের প্রয়োজন মেটাতে নিজের দেহ বিক্রি করতে শুরু করেন তিনি। সময়টা ২০০৫ সাল। এভাবেই চলছিলো, কিন্তু হুট করে একদিন বুঝতে পারে সে আক্রান্ত হয়েছে মারণব্যাধী এইডসে। তামিলনাড়ুর একটি হাসপাতালে শারীরিক পরীক্ষার পর তিনি বিষয়টি জানতে পারেন। এইডসে আক্রান্ত হবার খবর ছড়িয়ে পড়ে পরিচিতজনদের কাছে দ্রুতই। সবাই ফেলে চলে যায় নিশাকে। এক সময়ের লাখো তরুন যুবকের হৃদয়ে ঝড় তোলা সেই মিষ্টি মুখ হারিয়ে যায় ধীরে ধীরে। পরে তার শরীরের এমন অবস্থা হয় যে তার মুখ দেখে চেনার উপায় ছিল না! তাকে দেখলেই মানুষ ভয়ে আঁতকে উঠত। এভাবেই বিনা চিকিতসায় করুন পরিনতির শিকার নিশা নুরকে ২০০৭সালের শেষের দিকে খোলা রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। সেসময় মুসলিম মুন্নীতা নামের একটি স্বেচ্ছাসেবক দল তাকে থামবারাম হাসপাতালে ভর্তি করান। হাসপাতালে ভর্তির কদিন পরেই মৃত্যুর কাছে হেরে যান একসময়ের জনপ্রিয় এই নায়িকা ।