তারেক রহমানের ৫৩তম জন্মদিন উপলক্ষে
ডালিয়া লাকুরিয়া যুক্তরাজ্য থেকে
দেশনায়ক তারেক রহমানের ৫৩তম জন্মদিন উপলক্ষে আমার পক্ষ থেকে উপহার —এই লিখা
কি করুণ পরিণতি - সময়টা ৮০ র দশকে। সে সময়ে তিনি ছিলেন পর্দা কাঁপানো অভিনেত্রী। ভারতের দক্ষিণী (তামিল) সিনেমার জনপ্রিয় নায়িকা নিশা নুর। পর্দায় সাবলীল অভিনয় আর মিষ্টি চেহারার সুবাদে লাখো পুরুষের স্বপ্নে ছিলেন এই নায়িকা ।তামিল এবং মালয়ালি সিনেমার সুপারস্টার রজনীকান্ত এবং কমল হাসানের সঙ্গে বহু সিনেমায় অভিনয় করেছেন নিশা। সর্বশেষ আইয়ের দ্য গ্রেট (১৯৯০) নামের একটি সিনেমায় অভিনয় করে সাড়া ফেলেছিলেন তিনি। এরপর ধীরে ধীরে হারিয়ে যান সবার অন্তরালে । সময়ের স্রোতে একসময় ভুলে যায় সবাই। টিক টিক টিক (১৯৮১), কল্যাণা আগাথিগাল (১৯৮৬) এবং আইয়ের দ্য গ্রেট (১৯৯০) সিনেমার জন্য বিশেষভাবে পরিচিত ছিলেন এই অভিনেত্রী। পরিবারের আপনার অ্যান্ড্রয়েড চালাতেই নাকি তিনি পতিতাবৃত্তিতে নামতে বাধ্য হয়েছিলেন।
অথচ মৃত্যুর সময় তার পাশে দাঁড়াননি তাঁর পরিবার ও বন্ধুরা। মৃত্যু পর রাস্তা থেকে উদ্ধার হয় তার কঙ্কালসার লাশ। হায়, ভাগ্যের কী নিদারুণ পরিহাস!
সুত্রমতে ২০০৭ সালে এইডসে আক্রান্ত হয়ে দীর্ঘদিন ভোগার পর বিনা চিকিতসায় করুন মৃত্যু হয় তাঁর। আর দশটা সাধারন খবরের মতই অন্তরালে চলে যায় তার মৃত্যুর খবর। যে পুরুষরা তাকে নিয়ে রঙিন স্বপ্ন দেখতেন তারা নিশার এই চেহারা দেখলে আঁতকে উঠবেন। সুত্র বলছে, ব্যক্তিগত জীবনে প্রচন্ড জেদি ও অভিমানী ছিলেন এই নায়িকা। ১৯৯০ তে সর্বশেষ সিনেমায় অভিনয়ের পর তার মায়ের মৃত্যু হয়। এরপর ধীরে ধীরে মিডিয়া অঙ্গন থেকে নিজেকে গুটিয়ে ফেলেন তিনি। সে সময় না কি সিনেমায় লগ্নিকারী এক ধনাঢ্য ব্যবসায়ী প্রেমে পড়েছিলেন নিশা নুর। এরপর ভালোবেসে প্রেমিকের কথা রাখতেই সিনেমার জগত ছেড়ে দেন পুরোপুরি।
তবে ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে সেই প্রেমিকের কাছে প্রতারণার শিকার হন কিছুদিন পরেই। নিশা বুঝতে পারে 'তাকে শুধু ভোগ করাই উদ্দেশ্য ছিলো কথিত প্রেমিকের'। এরপর জেদ আর অভিমানে পুরাতন জীবনেও ফেরা হয়নি তার। নিঃসঙ্গ জীবন কাটাতে অভ্যস্ত হয়ে পড়েন সেসময় । অভিযোগ আছে সেই প্রেমিকের ব্লাকমেইলিং এর শিকার হয়ে একসময় তাকে অন্যজনের বিছানায় যেতে বাধ্য করা হয়।
প্রকাশিত বিভিন্ন সংবাদ সুত্র বলছে, সিনেমার জগৎ ও প্রেমিকের কাছে প্রতারনার শিকার হবার পর সব ছেড়ে একসময় দারুন অভাবের মুখোমুখি হয়ে পড়েন তিনি
। বিলাসী জীবন কাটানো সেই নিশা নুর বাস্তবতার কষাঘাতে প্রথম কিছুদিন ধনাঢ্য ব্যবসায়ীদের সাথে সখ্যতা বাড়িয়ে তাদের মনোরঞ্জন করে চলছিলো নিশা। পরে সময়ের স্রোতে হারাতে থাকে নিজের ক্রেজ। বাড়তি চাহিদা ও পরিবারের প্রয়োজন মেটাতে নিজের দেহ বিক্রি করতে শুরু করেন তিনি। সময়টা ২০০৫ সাল। এভাবেই চলছিলো, কিন্তু হুট করে একদিন বুঝতে পারে সে আক্রান্ত হয়েছে মারণব্যাধী এইডসে। তামিলনাড়ুর একটি হাসপাতালে শারীরিক পরীক্ষার পর তিনি বিষয়টি জানতে পারেন। এইডসে আক্রান্ত হবার খবর ছড়িয়ে পড়ে পরিচিতজনদের কাছে দ্রুতই। সবাই ফেলে চলে যায় নিশাকে। এক সময়ের লাখো তরুন যুবকের হৃদয়ে ঝড় তোলা সেই মিষ্টি মুখ হারিয়ে যায় ধীরে ধীরে। পরে তার শরীরের এমন অবস্থা হয় যে তার মুখ দেখে চেনার উপায় ছিল না! তাকে দেখলেই মানুষ ভয়ে আঁতকে উঠত। এভাবেই বিনা চিকিতসায় করুন পরিনতির শিকার নিশা নুরকে ২০০৭সালের শেষের দিকে খোলা রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। সেসময় মুসলিম মুন্নীতা নামের একটি স্বেচ্ছাসেবক দল তাকে থামবারাম হাসপাতালে ভর্তি করান। হাসপাতালে ভর্তির কদিন পরেই মৃত্যুর কাছে হেরে যান একসময়ের জনপ্রিয় এই নায়িকা ।
দ্বিতীয় বারের মত সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত :
২০২৬ সালের ৬ মার্চ জনাব তারেক রহমান দ্বিতীয় বারের মত বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন । এইদিন রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ও এ নির্বাচনের জন্য গঠিত কমিশনের চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার এ ঘোষণা দেন। এ সময় নির্বাচন কমিশনের সদস্য সচিব ও দলের নির্বাহী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার আমিনুল হক, ইসির সদস্য ও দলের ভাইস চেয়ারম্যান হারুন আল রশিদ উপস্থিত ছিলেন।
১৯ মার্চ বিএনপির ষষ্ঠ কাউন্সিলে তারেক রহমানের ভিডিওতে ধারনকৃত ভাষন প্রচারিত
হয় ।
তারেক রহমানের নেতৃত্ব উত্তরাধিকার, অর্জন ও বৈধতা
তাত্ত্বিক ও ফলিত রাজনীতি বিজ্ঞান আলোচনায় নেতৃত্ব সবিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বলে বিবেচিত হয়। নেতৃত্ব সাহিত্যে উত্তরাধিকার, অর্জন, সম্মোহন ইত্যাদি ধরনের নেতৃত্বের আলোচনা রয়েছে। যিনি মানবকল্যাণের লক্ষ্যে স্থিরকৃত লক্ষ্যার্জনের জন্য রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা লাভের পথ মানেন, সে লক্ষ্যে নিজেকে এবং সংগঠিত অনুসারীদের পরিচালনায় সক্ষম তিনিই হচ্ছেন সফল রাজনৈতিক নেতা। ফরাসি প্রেসিডেন্ট জর্জ পম্পিডু বলেছিলেন : রাজনীতিক জাতিকে তার সেবায় নিয়োজিত রাখেন। আর রাষ্ট্রনায়ক জাতির সেবায় নিজেকে উৎসর্গ করেন।
সমকালীন বাংলাদেশের যুব রাজনীতিতে তারেক রহমান সবচেয়ে আলোচিত নাম। আগামী দিনের বাংলাদেশ-রাজনীতির কাণ্ডারি হিসেবেও তিনি হন বিবেচিত। বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সন্তান হিসেবে তিনি উত্তরাধিকারভিত্তিক আত্মতুষ্টির যেমনি অংশীদার, তেমনি নিজ যোগ্যতা ও সাধনার বলে বাংলাদেশের দেশপ্রেমিক জাতীয়তাবাদী ও উদার ধর্মীয় মূল্যবোধে বিশ্বাসী আপামর জনতার কাছে এরই মধ্যে সংগ্রামী ও ত্যাগী নায়ক হিসেবে গ্রহণীয় হয়েছেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব, অখণ্ডতা, স্বাতন্ত্র্য ও আধিপত্যবাদবিরোধী জনতার সংগঠন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) অবিসংবাদিত ভবিষ্যত্ নেতা হিসেবেও তার আসন এরই মধ্যে নির্ধারিত হয়ে গেছে।
সব যুগে সব দেশের রাজনীতিতে উত্তরাধিকার নানাভাবে কমবেশি কাজ করে থাকে। এ প্রভাব থেকে আধুনিক ও উন্নত দেশগুলোও সম্পূর্ণ মুক্ত নয়। অনুন্নত ও উন্নয়নশীল দেশে তো উত্তরাধিকার এখনও নেতৃত্বের অন্যতম নির্ধারক। উপমহাদেশের বর্তমান রাজনীতিতে উত্তরাধিকারের জয়জয়কার চলছে। অনুন্নত বিশ্বের গণতান্ত্রিক দেশগুলোর উত্তরাধিকারভিত্তিক রাজনীতি তখনই টেকসই ও গ্রহণীয়তা পায় যখন এর সঙ্গে যুক্ত হয় ব্যক্তিগত যোগ্যতা, শ্রম আর সাধনা। নেহরু, বন্দরনায়েকে ও ভুট্টো পরিবারের সন্তানরা উত্তরাধিকার ও যোগ্যতার সমন্বয়ে দেশবাসী ও অনুসারীদের কাছে ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছেন। সাধারণের কাছে নেতৃত্বের এ আবেদন ও জনপ্রিয়তা নেতাকে এনে দেয় বৈধতা। আর গণতান্ত্রিক সমাজে নির্বাচিত বৈধ নেতৃত্বই জনগণের কাছে স্বাভাবিকভাবে বরণীয় হয়ে দেশ ও দশের কল্যাণ সাধনে সক্ষম হন।
অবারিত সুযোগ থাকলেও উত্তরাধিকার তারেক রহমানের রাজনীতির একমাত্র পাথেয় হয়নি। দলের প্রাথমিক সদস্যপদ গ্রহণ করে দল ও দেশের জন্য কঠোর পরিশ্রম করে পর্যায়ক্রমে তিনি হয়ে উঠেছেন জননেতা। তার পিতা বীর উত্তম জিয়াউর রহমান যেমনি আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে কিংবদন্তিসম গৌরবময় ভূমিকাকেন্দ্রিক জনপ্রিয়তা অবলম্বন করে রাষ্ট্রক্ষমতা ছিনিয়ে নেননি, বরং জাতির ক্রান্তিকালে বাধ্য হয়ে রাজনীতিতে এসেছেন—তেমনি তারেক রহমানও কেবল উপর থেকে আয়োজিত নেতা না হয়ে পর্যায়ক্রমে অনুসারীদের দ্বারা অনুরুদ্ধ হয়ে দল ও দেশের প্রয়োজনে সামনের দিকে এগিয়ে গেছেন। এ বাস্তবতা তারেক রহমানের মতো দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার রাজনীতিতে আসার ক্ষেত্রেও ছিল সমাধিক প্রযোজ্য। শহীদ জিয়ার অবর্তমানে দল ও দেশের এক দুঃসময়ে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকেও রাজনীতিতে আবির্ভূত হতে হয়েছে। রাজনীতিতে তাদের পদচারণা যেমনি সময়ের দাবি ছিল, ঠিক তেমনি সময়কেও পরবর্তীকালে নিয়ন্ত্রণে তারা হয়েছেন সক্ষম
একমাত্র রাজনীতিক, যিনি রাষ্ট্রনায়ক হওয়ার সাধনায় নিয়োজিত। ‘আমার শিক্ষক’ নিবন্ধে তিনি লিখেছেন, ‘যে সময় একজন কিশোরের পথ চলতে শেখার জন্য দরকার তার জীবনের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য শিক্ষককে, অর্থাৎ তার বাবাকে; কিন্তু আমার এই শিক্ষকের কাছ থেকে সরাসরি বেশি কিছু শেখার অবকাশ হয়নি। তার প্রধান কারণ, আমাদের এই শিক্ষকের কাঁধে ন্যস্ত ছিল সেই সময়ে সমগ্র দেশ ও জনগণের গুরুদায়িত্ব। তাই পরবর্তী সময়ে আমাদের শিখতে হয়েছে এই শিক্ষকের রেখে যাওয়া সততা থেকে, শিখতে হয়েছে তার রেখে যাওয়া আদর্শ থেকে এবং সেসব কর্ম থেকে, যা তিনি একজন পিতা হিসেবে আমাদের দিয়ে করিয়েছেন, বলেছিলেন করতে, তা থেকে। তারই ছোট ছোট অনেক ঘটনা রয়েছে। ঘটনাগুলো বিচার করলে এর প্রভাব আমাদের জীবনে অনেক।’
শহীদ জিয়ার প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের আদর্শ সম্পর্কে বেগম খালেদা জিয়ার অভিমত হচ্ছে : পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে মুসলিম লীগ নেতৃত্ব দিয়েছিল, কিন্তু পরে তারা যুগের চাহিদা মেটাতে পারেনি। বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পুরোভাগে আওয়ামী লীগ ছিল। কিন্তু পরে তারা রাজনৈতিক দল হিসেবে সফল হতে ব্যর্থ হয়। সেই ব্যর্থতার পটভূমিতেই বিএনপির জন্ম। একটি স্বাধীন দেশের উপযোগী রাজনীতি করার অঙ্গীকারে, সঙ্কটে, শান্তিতে, সংগ্রামে এ দল গত ৩১ বছরে নতুন রাজনীতির ধারা তৈরি করেছে। অনেক অভিজ্ঞতায় এ দল শিক্ষিত। অনেক শহীদের রক্তে আমাদের প্রতিজ্ঞা অটল হয়েছে। দ্বন্দ্ব-বিভাজন-সংঘাতের বিপরীতে আমরা জাতীয় ঐক্যের পতাকা উড্ডীন রেখে চলেছি। আমরা সব ধর্ম, বর্ণ, শ্রেণী-পেশার মানুষ সাম্প্রদায়িকতাকে রুখে দাঁড়াব। বিশ্ব পরিসরে সমমর্যাদার ভিত্তিতে সবার দিকে বাড়িয়ে দেব বন্ধুত্বের হাত। থাকব অনড়, অটল। ডান কিংবা বামপন্থী আমরা নই। আমাদের ডানে যাদের অবস্থান তারা ডানপন্থী, আমাদের বামে যাদের অবস্থান তারা বামপন্থী। আমাদের অবস্থান ডানপন্থীর বামে এবং বামপন্থীদের ডানে। আমাদের অবস্থান কেন্দ্রে এবং এদেশের রাজনীতির কেন্দ্র আমরাই। বাংলাদেশ জ
দ্বিতীয় বারের মত সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত :
২০২৬ সালের ৬ মার্চ জনাব তারেক রহমান দ্বিতীয় বারের মত বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন । এইদিন রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ও এ নির্বাচনের জন্য গঠিত কমিশনের চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার এ ঘোষণা দেন। এ সময় নির্বাচন কমিশনের সদস্য সচিব ও দলের নির্বাহী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার আমিনুল হক, ইসির সদস্য ও দলের ভাইস চেয়ারম্যান হারুন আল রশিদ উপস্থিত ছিলেন।
১৯ মার্চ বিএনপির ষষ্ঠ কাউন্সিলে তারেক রহমানের ভিডিওতে ধারনকৃত ভাষন প্রচারিত
হয় ।
তারেক রহমানের নেতৃত্ব উত্তরাধিকার, অর্জন ও বৈধতা
তাত্ত্বিক ও ফলিত রাজনীতি বিজ্ঞান আলোচনায় নেতৃত্ব সবিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বলে বিবেচিত হয়। নেতৃত্ব সাহিত্যে উত্তরাধিকার, অর্জন, সম্মোহন ইত্যাদি ধরনের নেতৃত্বের আলোচনা রয়েছে। যিনি মানবকল্যাণের লক্ষ্যে স্থিরকৃত লক্ষ্যার্জনের জন্য রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা লাভের পথ মানেন, সে লক্ষ্যে নিজেকে এবং সংগঠিত অনুসারীদের পরিচালনায় সক্ষম তিনিই হচ্ছেন সফল রাজনৈতিক নেতা। ফরাসি প্রেসিডেন্ট জর্জ পম্পিডু বলেছিলেন : রাজনীতিক জাতিকে তার সেবায় নিয়োজিত রাখেন। আর রাষ্ট্রনায়ক জাতির সেবায় নিজেকে উৎসর্গ করেন।
সমকালীন বাংলাদেশের যুব রাজনীতিতে তারেক রহমান সবচেয়ে আলোচিত নাম। আগামী দিনের বাংলাদেশ-রাজনীতির কাণ্ডারি হিসেবেও তিনি হন বিবেচিত। বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সন্তান হিসেবে তিনি উত্তরাধিকারভিত্তিক আত্মতুষ্টির যেমনি অংশীদার, তেমনি নিজ যোগ্যতা ও সাধনার বলে বাংলাদেশের দেশপ্রেমিক জাতীয়তাবাদী ও উদার ধর্মীয় মূল্যবোধে বিশ্বাসী আপামর জনতার কাছে এরই মধ্যে সংগ্রামী ও ত্যাগী নায়ক হিসেবে গ্রহণীয় হয়েছেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব, অখণ্ডতা, স্বাতন্ত্র্য ও আধিপত্যবাদবিরোধী জনতার সংগঠন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) অবিসংবাদিত ভবিষ্যত্ নেতা হিসেবেও তার আসন এরই মধ্যে নির্ধারিত হয়ে গেছে।
সব যুগে সব দেশের রাজনীতিতে উত্তরাধিকার নানাভাবে কমবেশি কাজ করে থাকে। এ প্রভাব থেকে আধুনিক ও উন্নত দেশগুলোও সম্পূর্ণ মুক্ত নয়। অনুন্নত ও উন্নয়নশীল দেশে তো উত্তরাধিকার এখনও নেতৃত্বের অন্যতম নির্ধারক। উপমহাদেশের বর্তমান রাজনীতিতে উত্তরাধিকারের জয়জয়কার চলছে। অনুন্নত বিশ্বের গণতান্ত্রিক দেশগুলোর উত্তরাধিকারভিত্তিক রাজনীতি তখনই টেকসই ও গ্রহণীয়তা পায় যখন এর সঙ্গে যুক্ত হয় ব্যক্তিগত যোগ্যতা, শ্রম আর সাধনা। নেহরু, বন্দরনায়েকে ও ভুট্টো পরিবারের সন্তানরা উত্তরাধিকার ও যোগ্যতার সমন্বয়ে দেশবাসী ও অনুসারীদের কাছে ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছেন। সাধারণের কাছে নেতৃত্বের এ আবেদন ও জনপ্রিয়তা নেতাকে এনে দেয় বৈধতা। আর গণতান্ত্রিক সমাজে নির্বাচিত বৈধ নেতৃত্বই জনগণের কাছে স্বাভাবিকভাবে বরণীয় হয়ে দেশ ও দশের কল্যাণ সাধনে সক্ষম হন।
অবারিত সুযোগ থাকলেও উত্তরাধিকার তারেক রহমানের রাজনীতির একমাত্র পাথেয় হয়নি। দলের প্রাথমিক সদস্যপদ গ্রহণ করে দল ও দেশের জন্য কঠোর পরিশ্রম করে পর্যায়ক্রমে তিনি হয়ে উঠেছেন জননেতা। তার পিতা বীর উত্তম জিয়াউর রহমান যেমনি আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে কিংবদন্তিসম গৌরবময় ভূমিকাকেন্দ্রিক জনপ্রিয়তা অবলম্বন করে রাষ্ট্রক্ষমতা ছিনিয়ে নেননি, বরং জাতির ক্রান্তিকালে বাধ্য হয়ে রাজনীতিতে এসেছেন—তেমনি তারেক রহমানও কেবল উপর থেকে আয়োজিত নেতা না হয়ে পর্যায়ক্রমে অনুসারীদের দ্বারা অনুরুদ্ধ হয়ে দল ও দেশের প্রয়োজনে সামনের দিকে এগিয়ে গেছেন। এ বাস্তবতা তারেক রহমানের মতো দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার রাজনীতিতে আসার ক্ষেত্রেও ছিল সমাধিক প্রযোজ্য। শহীদ জিয়ার অবর্তমানে দল ও দেশের এক দুঃসময়ে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকেও রাজনীতিতে আবির্ভূত হতে হয়েছে। রাজনীতিতে তাদের পদচারণা যেমনি সময়ের দাবি ছিল, ঠিক তেমনি সময়কেও পরবর্তীকালে নিয়ন্ত্রণে তারা হয়েছেন সক্ষম
একমাত্র রাজনীতিক, যিনি রাষ্ট্রনায়ক হওয়ার সাধনায় নিয়োজিত। ‘আমার শিক্ষক’ নিবন্ধে তিনি লিখেছেন, ‘যে সময় একজন কিশোরের পথ চলতে শেখার জন্য দরকার তার জীবনের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য শিক্ষককে, অর্থাৎ তার বাবাকে; কিন্তু আমার এই শিক্ষকের কাছ থেকে সরাসরি বেশি কিছু শেখার অবকাশ হয়নি। তার প্রধান কারণ, আমাদের এই শিক্ষকের কাঁধে ন্যস্ত ছিল সেই সময়ে সমগ্র দেশ ও জনগণের গুরুদায়িত্ব। তাই পরবর্তী সময়ে আমাদের শিখতে হয়েছে এই শিক্ষকের রেখে যাওয়া সততা থেকে, শিখতে হয়েছে তার রেখে যাওয়া আদর্শ থেকে এবং সেসব কর্ম থেকে, যা তিনি একজন পিতা হিসেবে আমাদের দিয়ে করিয়েছেন, বলেছিলেন করতে, তা থেকে। তারই ছোট ছোট অনেক ঘটনা রয়েছে। ঘটনাগুলো বিচার করলে এর প্রভাব আমাদের জীবনে অনেক।’
শহীদ জিয়ার প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের আদর্শ সম্পর্কে বেগম খালেদা জিয়ার অভিমত হচ্ছে : পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে মুসলিম লীগ নেতৃত্ব দিয়েছিল, কিন্তু পরে তারা যুগের চাহিদা মেটাতে পারেনি। বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পুরোভাগে আওয়ামী লীগ ছিল। কিন্তু পরে তারা রাজনৈতিক দল হিসেবে সফল হতে ব্যর্থ হয়। সেই ব্যর্থতার পটভূমিতেই বিএনপির জন্ম। একটি স্বাধীন দেশের উপযোগী রাজনীতি করার অঙ্গীকারে, সঙ্কটে, শান্তিতে, সংগ্রামে এ দল গত ৩১ বছরে নতুন রাজনীতির ধারা তৈরি করেছে। অনেক অভিজ্ঞতায় এ দল শিক্ষিত। অনেক শহীদের রক্তে আমাদের প্রতিজ্ঞা অটল হয়েছে। দ্বন্দ্ব-বিভাজন-সংঘাতের বিপরীতে আমরা জাতীয় ঐক্যের পতাকা উড্ডীন রেখে চলেছি। আমরা সব ধর্ম, বর্ণ, শ্রেণী-পেশার মানুষ সাম্প্রদায়িকতাকে রুখে দাঁড়াব। বিশ্ব পরিসরে সমমর্যাদার ভিত্তিতে সবার দিকে বাড়িয়ে দেব বন্ধুত্বের হাত। থাকব অনড়, অটল। ডান কিংবা বামপন্থী আমরা নই। আমাদের ডানে যাদের অবস্থান তারা ডানপন্থী, আমাদের বামে যাদের অবস্থান তারা বামপন্থী। আমাদের অবস্থান ডানপন্থীর বামে এবং বামপন্থীদের ডানে। আমাদের অবস্থান কেন্দ্রে এ ল্যাপটপবং এদেশের রাজনীতির কেন্দ্র আমরাই। বাংলাদেশ জ
জাতীয়তাবাদী ও দেশপ্রেমিক নেতৃত্বকে নানাভাবে জাতীয়-আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে চরম বৈরী পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হয়েছে। তারেক রহমানও এর ব্যতিক্রম নন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব, অখণ্ডতা, স্বাতন্ত্র্য ও জাতীয় স্বার্থ সুরক্ষায় নিবেদিত বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের ঐক্যের প্রতীক জিয়া পরিবারকে সার্বিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করতে ১/১১-পূর্ব ও পরবর্তীকালে ষড়যন্ত্রের নানা জাল বোনা হয়েছে। এতদসত্ত্বেও দেশপ্রেমিক জনগণের সহায়তায় জিয়া পরিবার আবার ঘুরে দাঁড়াতে সক্ষম হয়েছে সবলভাবে। দেশপ্রেমিক জনগণের প্রত্যাশা তারেক রহমান নিজ যোগ্যতায় হয়ে উঠবেন আরও উজ্জ্বলতর। জিয়া পরিবারের হিতৈষী এবং তারেক রহমানের শিক্ষক অকাল প্রয়াত প্রফেসর এ.ইউ.বি রাজিয়া আকতার বানু ১/১১-পরবর্তীকালে তারেক রহমান সম্পর্কে লিখেছেন : তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে তাকে শারীরিকভাবে ধ্বংস করে চিরদিনের জন্য রাজনীতির অঙ্গন থেকে বিতাড়নের চেষ্টা হয়েছিল। শুধু তারেক রহমান নয়, যে কোনো মানুষের জীবনের জন্যেই এটি চরম মানবাধিকার লঙ্ঘন। …জাতীয়তাবাদী রাজনীতি কোনোভাবেই একজন সফল ও বলিষ্ঠ তরুণ সংগঠকের সেবা বঞ্চিত হতে পারে না। তারুণ্য ২০০৯-এর নির্বাচনে যথেষ্ট অবদান রেখেছে। বিএনপিকে ডিজিটাল চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে এবং ভবিষ্যতে নির্বাচনের সুষ্ঠু প্রস্তুতির জন্য তারেক জিয়ার উপস্থিতি জরুরি। …সবচেয়ে বড় কথা হলো, বর্তমান বিএনপি নেত্রী যিনি জাতীয়তাবাদী শক্তির ঐক্যের প্রতীক, যিনি বিএনপিকে সংগঠিত করে এতদূর নিয়ে এসেছেন তিনি সব ধরনের সহায়তা স্বচ্ছন্দে তারেকের কাছ থেকে পেতে পারেন। …মাস্টারদের সমস্যা হলো সবাইকে ছাত্র মনে করা (তারেক আসলেই আমার ছাত্র) এবং কিছু উপদেশ দান করা। …যদি স্বাস্থ্য অনুমোদন করে তাহলে এই সুযোগে সে বড় বড় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের জীবনী ও রাজনৈতিক তত্ত্ব পড়ে ফেলতে পারে। …নেহরু, ম্যান্ডেলা, জর্জ ওয়াশিংটন, আব্রাহাম লিঙ্কন এমনকি ওবামা, গান্ধী, এডমন্ড বার্ক, প্লেটো, এরিস্টটল, হবস, লক, রুশোর লেখনী একজন রাজনীতিকের জ্ঞানকে অনেক সমৃদ্ধ করে। তার দূরদৃষ্টি চার দেয়ালের বাইরে বিশ্বব্যাপী বিস্তৃত হয়, তাকে জ্ঞানসম্পন্ন করে এবং সুশাসনে উদ্বুদ্ধ করে। তাকে কৌশলী হতে হবে যেন অহেতুক বিতর্কের সৃষ্টি না হয়। পরিবর্তিত, পরিশীলিত, জ্ঞানী, ধৈর্যশীল এক তারেক জিয়ার রাজনীতিতে প্রত্যাবর্তন ঘটুক এটা বিএনপি ও বাংলাদেশের গণতন্ত্রের জন্য শুভ সংবাদ (জাতীয়তাবাদী রাজনীতি ও তারেক জিয়া)।
পৃথিবীর সব মানুষ সব যোগ্যতা ও সব সুযোগ সব সময় লাভ করে না। তারেক রহমান উত্তরাধিকার ভিত্তিতে প্রাপ্ত সুযোগ ও অর্জিত যোগ্যতার ওপর ভর করে এরই মধ্যে জাতীয়তাবাদী শক্তির আগামীদিনের বৈধ নেতার আসন অর্জনে সক্ষম হয়েছেন। ভবিষ্যতে আরও অভিজ্ঞ ও বিকশিত তারেক রহমান বাংলাদেশ গণতন্ত্রকে আরও উদার ও প্রাতিষ্ঠানিক ভিত্তি দানে সফল হবেন—তার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আরও স্থিতিশীলতা, সমৃদ্ধী ও স্বনির্ভরতার দিকে এগিয়ে যাবে—এটিই দেশপ্রেমিক দেশবাসীর প্রত্যাশা।
ডালিয়া লাকুরিয়া