বিমান দুর্ঘটনা: মরদেহ আনতে জটিলতা
এদিকে নিহতদের মৃতদেহ দ্রুত ফেরত পেতে চাইছেন স্বজনরা। তারা এখনো ইউএস বাংলা কার্যালয়ে ভিড় করছেন। নিহত বিলকিস বেগমের ভাবি মজিদা আক্তার বিথী, নিহত পিয়াশ রায়ের পিতা মুখেন্দ্র বিকাশ রায়সহ অনেকেই স্বজনের লাশের জন্য ইউএস বাংলা কার্যালয় ও আশপাশে অবস্থান করছেন গত দুই দিন ধরে। লাশ আনার প্রক্রিয়ায় ধীরগতির কথা শুনে তারা আরও ভেঙে পড়েছেন। তারা ইউএস বাংলা অফিসে এসে দ্রুত মৃতদেহ ফিরিয়ে আনার দাবি জানিয়েছেন। প্রয়োজনে ডিএনএ টেষ্ট -এর জন্য বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দল নেপালে পাঠানোর দাবি জানিয়েছেন।
এদিকে ইউএস বাংলার জনসংযোগ বিভাগের মহাব্যবস্থাপক কামরুল ইসলাম বলেছেন, ইউএস বাংলা প্রস্তুত থাকলেও নেপাল সরকারের বেশ কিছু আনুষ্ঠানিকতার কারণে মরদেহ ফিরিয়ে আনতে সময় লাগতে পারে। একই সাথে পুরোপুরি শনাক্ত করার জন্য ডিএনএ টেষ্ট সম্পন্ন করতেও সময় লাগবে। এর আগেও সেখানে বিমান দুর্ঘটনায় নিহতদের মৃতদেহ নিয়ে ঝামেলা হয়ায় এবার নেপাল সরকার কড়াকড়ি করছে বলে জানান তিনি।
মঙ্গলবার ১১টি মরদেহের পোস্ট মর্টেম সম্পন্ন হয়েছে। কিন্তু এই এগার জন কারা সেটি নিশ্চিত করা যায়নি। ৪৯টি লাশের ময়নাতদন্ত চলবে আরো কয়েকদিন। মৃতদেহের পরিচয় নিশ্চিত করতে কতদিন সময় লাগবে সেটি কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করে বলতে পারছে না। তবে অন্তত তিন চারদিন লাগবে ময়নাতদন্তের জন্যই। প্রাথমিক তদন্তে পরিচয় নিশ্চিত হতেই এক সপ্তাহ লেগে যেতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এদিকে কাঠমাণ্ডুতে বাংলাদেশ দূতাবাস থেকেও জানানো হয়েছে আইনি জটিলতার কারণে নেপাল থেকে মরদেহ নিতে কিছুটা সময় লাগবে। কোনো মৃতদেহ ডিএনএ পর্যন্ত গড়ালে সেটি আরো সময়সাপেক্ষ হবে বলেও জানিয়েছে কাঠমান্ডুর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
সোমবারের ওই দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত ২৬ বাংলাদেশি মারা গেছে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। মরদেহ কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা হাসপাতালের ফরেনসিক ল্যাবে রয়েছে। হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের ডাক্তার প্রমোদ শ্রেষ্ঠ জানিয়েছেন, পরিচয় সুনিশ্চিত হয়ে তারা মরদেহ হস্তান্তর করতে চান। পরিচয় জানতে চারটি দল কাজ করছে। এর মধ্যে দুটি দল ময়না তদন্ত করছে। একটি দল মরদেহের নানা স্যাম্পল নিয়ে সেখান থেকে পরিচয় জানার চেষ্টা করছে আর অন্যটি পরিবারের স্বজনদের কাছ থেকে বিভিন্ন তথ্য নিয়ে নিশ্চিত হবার চেষ্টা করছে। এই চারটি দল সম্মিলিতভাবে একটি মরদেহের পরিচয় নিশ্চিত করার কাজটি সম্পন্ন করবে। এই প্রক্রিয়ার মধ্যেই প্রতিটি মরদেহের ডিএনএ স্যাম্পল সংগ্রহ করা হচ্ছে।
