Header Ads

খালেদা জিয়ার মুক্তিকে বিলম্বিত করার চেষ্টা করছে সরকার : বিএনপি

ক্ষমতাসীন সরকার পরিকল্পিতভাবে বেআইনি কাজ করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার মামলার রায়ের সার্টিফাইড কপি নিয়ে সরকার ধূম্রজাল সৃষ্টি করছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে ঢাকা বারের জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের নবীন আইনজীবীদের সঙ্গে জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকের পর তিনি সাংবাদিকদের কাছে এ অভিযোগ করেন। বিকেল সোয়া ৫টায় আইনজীবীদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন বিএনপির শীর্ষ নেতৃবৃন্দ।
বৈঠকে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। আইনজীবীদের মধ্যে সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নাল আবেদীন, সম্পাদক মাহবুবউদ্দিন খোকন, সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, মীর নাসির, নিতাই রায় চৌধুরী, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সানাউল্লাহ মিয়া, রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, অ্যাডভোকেট ফাহিমা নাসরিন মুন্নী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে কারা অন্তরীণ খালেদা জিয়ার মামলা, তার মুক্তির দাবিতে চলমান আন্দোলন এবং আসন্ন ঢাকা বারের নির্বাচন প্রভৃতি নিয়ে আলোচনা হয়। বৈঠকে খালেদা জিয়ার মুক্তি ও পরবর্তী করণীয় কী হওয়া উচিৎ তা নিয়ে নবীন আইনজীবীদের পরামর্শমূলক বক্তব্য শুনেন বিএনপির নেতৃবৃন্দ।
বৈঠক শেষে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, দেশনেত্রীর মামলার রায়ের কপি নিয়ে সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে ধূম্রজাল সৃষ্টি করছে। তাকে সার্টিফাইড কপি দেয়া হচ্ছে না। এটা সম্পূর্ণভাবে আইনের লঙ্ঘন। যে বিধান রয়েছে সেখানে মাত্র পাঁচ দিনের মধ্যে সার্টিফাইড কপি দেবার কথা। সেটা এখন পর্যন্ত তাকে দেয়া হয়নি, ৮ দিন হয়ে গেছে। এ থেকে বোঝা যায় সরকার অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে আইনকে হাতে নিয়ে বেআইনি কাজ করছে এবং দেশনেত্রীর মুক্তি দেয়াকে বিলম্বিত করবার চেষ্টা করছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। আইন যাতে তার গতিতে চলে সে দাবি জানান বিএনপি মহাসচিব।
তিনি বলেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে রাজনীতি ও নির্বাচন থেকে দূরে সরিয়ে রাখার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে সরকার। কিন্তু জনগণ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এর জবাব দেবে।
প্রায় পৌনে ১ ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকে আলোচনার বিষয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এ বিষয়ে আইনজীবীরা সমর্থন দিয়েছেন। তারা বলেছেন, খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলনে সর্বোচ্চভাবে অংশগ্রহণ করবেন। আর আন্দোলনের মধ্যে দিয়েই তাকে (খালেদা জিয়া) মুক্ত করা হবে। এর বাইরে আগামীতে ঢাকা বারের নির্বাচন রয়েছে। সেই নির্বাচনে তারা সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করবেন বলে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। আর নির্বাচনে আইনজীবীরা জয় ছিনিয়ে আনবেন বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন বিএনপির মহাসচিব।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি জয়নাল আবেদীন বলেন, আমরা রায়ের দিনই আদালতের কাছে একটি সত্যায়িত কপি চেয়েছিলাম। এটা দেয়ার বিধান আছে। আমাদের হাইকোর্ট রুলসে বিধান আছে, একটি সত্যায়িত কপি দ্বারা যেকোনো আপিল ফাইল করা যায়। কিন্তু তারা আজ পর্যন্ত সত্যায়িত কপিটি সরবারহ করেনি। আমাদের ক্রিমিনাল রুলস অনুযায়ী ৫ কর্মদিবসের মধ্যে আদালত অবশ্যই সার্টিফাইড কপি সরবারহ করবেন।
তিনি বলেন, আদালত প্রতিদিনই বলছেন যে, আগামীকালকে পেয়ে যাবেন, আমরা পরীক্ষা করছি। এখানে পরীক্ষা করার কোনো বিষয় নেই। রায় দেবার পরে এটা পরিবর্তন করার বা অন্যকোনোভাবে এক্সামিন করার বা সংশোধন করার বা কোনো ল্যাগুয়েজ পরিবর্তন করার কোনো সুযোগ নেই।
প্রসঙ্গত, গত ৮ ফেব্রুয়ারি বেগম খালেদা জিয়াকে একটি দুর্নীতির মামলায় ৫ বছরের সাজা দেয় বিশেষ আদালত। সেদিন থেকেই তিনি কারাবন্দী। তার মুক্তির দাবিতে ইতিমধ্যে বিভিন্ন শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করেছে বিএনপি। আবারো তিনদিনের কর্মসূচি দেয়া হয়েছে।
এদিকে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে রায়ের পর আন্দোলন সংগ্রাম নিয়ে করণীয় প্রসঙ্গে দলের সিনিয়র নেতৃবৃন্দ, ২০ দলীয় জোট, পেশাজীবী নেতৃবৃন্দের সাথেও বৈঠক করেছে বিএনপি।
Blogger দ্বারা পরিচালিত.