Header Ads

কলাপাড়ায় যুবদলের নতুন কৌশল ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে


পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় এক ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে স্থানীয় যুবদলের এক নেতাকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী করার অভিযোগ তুলেছে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা।
উপজেলার ধানখালী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে শাহজাদা পারভেজ ওরফে টিনুকে দলের প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে, যিনি স্থানীয় যুবদলের নেতা বলে দাবি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের।
এছাড়া টিনুর বাবা আলতাফ হোসেন ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি ছিলেন।
দল থেকে টিনুকে মনোনয়ন দেওয়ার প্রতিবাদে গত কয়েকদিন ধরে দফায় দফায় বিক্ষোভ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে আসছে ইউনিয়ন, উপজেলা ও জেলা পর্যায়ের নেতা-কর্মী ও সমর্থকরা।
ধানখালী ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি শাহিন মোল্লা জানান, শাহজাদা পারভেজ টিনু ২০০৪ সালে ইউনিয়ন যুবদল কমিটির সদস্য ছিলেন। পরে তিনি ঢাকায় গিয়ে ব্যবসা করতেন।
তাছাড়া ধানখালী ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড যুবদল কমিটির একটি তালিকার ১৯ নম্বরে তার এখনও নাম রয়েছে।
পটুয়াখালী জেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরুল ইসলাম লিটন জানান, টিনু দলের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। তার বাবা আলতাফ হোসেন ওই ইউনিয়নে বিএনপির প্রভাবশালী নেতা ছিলেন।
ধানখালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক মো. রিয়াজ উদ্দিন তালুকদার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “তৃণমূল নেতাদের দেওয়া ভোটে আমি ২৩ এবং সদ্য স্বেচ্ছাসেবক লীগে যোগ দেওয়া যুবদল নেতা টিনু ১৭ ভোট পেয়েছেন।”
জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক উজ্জ্ব বোস ও উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ফিরোজ সিকদার অর্থের বিনিময়ে টিনুকে কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করেছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।
রিয়াজ তালুকদারের অভিযোগ, “একই প্রক্রিয়ায় তারা আমার নামের স্থানে তার নাম লিখে নকল কাগজ কেন্দ্রে পাঠায়।”
এ বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী আলমগীর হোসেন বলেন, “কেন্দ্রীয় মনোনয়ন বোর্ড প্রার্থী মনোনীত করেছে সেখানে আমার কোনো বক্তব্য নেই। জেলায় মোট সাত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের প্রার্থীদের তালিকা তৈরি করে কেন্দ্রে কাগজ পাঠানো হয়েছে।
“সেখানে ছয়টি ইউনিয়নেই ভোটে যারা প্রথম হয়েছে তারা মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। শুধু ধানখালীতে দ্বিতীয় ভোটপ্রাপ্ত প্রার্থী মনোনয়ন পেয়েছেন।”
বিষয়টি শুনে খোঁজ খবর নিয়ে দলের হাই কমান্ডে জানিয়েছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আমার কথা ছিল এরকম যেহেতু বিষয়টি আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে সেহেতু বিষয়টি নিয়ে হাই কমান্ডের ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।”
কলাপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম রাকিবুল আহসান বলেন,
“টিনু ১৭ ভোট পেয়ে দ্বিতীয় স্থানে ছিল। আর টিনুর মন্তব্যের কলামে লিখে দেওয়া হয়েছিল তিনি যুবদলের সদস্য এবং বিএনপি পরিবারের সদস্য।
“যা হয়েছে তা দলের পরিপন্থি বলে আমার মনে হয়।”
তবে জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক উজ্জল বোস বলেন, টিনু ২০১৪ সাল থেকে স্বেচ্ছাসেবক লীগের সঙ্গে জড়িত। তিনি বিএনপির কেউ নন।
অর্থনৈতিক সুবিধা নিয়ে তাকে দলে ভেড়ানো হয়েছে অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, “অর্থ নিয়ে আমি কাউকে মনোনয়ন দিতে পারি না। স্বেচ্ছাসেবক লীগের সঙ্গে যুক্ত বলেই তিনি তৃণমূল ভোটে অংশ নিতে পেরেছেন।”
যুবদল নেতা ছিলেন অস্বীকার করে টিনু বলেন, ২০১৪ সাল থেকে তিনি স্বেচ্ছাসেবক লীগের সঙ্গে জড়িত হন। এর আগে তিনি ব্যবসা করতেন।
তবে আমার বাবা আলতাফ হোসেন বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। তিনি ওই ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সভাপতি ছিলেন দীর্ঘ দিন।
আওয়ামী লীগের কোনো কমিটির তালিকায় তার নাম আছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “তা সংরক্ষণ করা হয়নি। তবে তা আপনাদের দেওয়া যাবে।”
গত ২২ ফেব্রুয়ারি ধানখালী ডিগ্রি কলেজ মাঠে এক বর্ধিত সভায় জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উপস্থিতিতে ভোটের মাধ্যমে প্রার্থী বাছায়ের সিদ্ধান্ত হয়। ভোটে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক মো. রিয়াজ উদ্দিন তালুকদার ২৩ ভোট এবং টিনু ১৭ ভোট পান।
ওই সভার পরে জেলা এবং উপজেলা পর্যায়ের আওয়ামী লীগ নেতারা টিনুকে বিএনপি পরিবারের সদস্য এবং একমাস আগে স্বেচ্ছাসেবক লীগে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে মন্তব্য লিখে দেন বলেও নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন।
আগামী ২৯ মার্চ ইউনিয়নটিতে ভোটগ্রহণের কথা করা রয়েছে। আরব খবর পড়ুন।
Blogger দ্বারা পরিচালিত.