Header Ads

আ.লীগকে আয়নায় মুখ দেখার পরামর্শ বিএনপির

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক : বিএনপিকে ‘দুর্নীতিপরায়ণ দল’ হিসেবে আখ্যায়িত করে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বক্তব্য আসার পর দলটিকে আয়নায় নিজেদের মুখ দেখার পরামর্শ দিয়েছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে এক অনুষ্ঠানে দলটিকে উদ্দেশ্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘সংসদে প্রধানমন্ত্রী বেশকিছু আপত্তিকর কথা বলেছেন। একটি বৃহত্তম রাজনৈতিক দল (বিএনপি) যার প্রতিষ্ঠার পর থেকে পাঁচবার রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেয়েছে, যে দল বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে, সংসদীয় গণতন্ত্র নিয়ে এসেছে, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা দিয়েছে, সেই দলটিকে তিনি বললেন দুর্নীতিপরায়ণ দল।’
‘‘এই কথা বলার আগে তো নিজের মুখ দেখতে হবে। মানুষ কি বলে আপনাদের সম্পর্কে তা শুনতে হবে তো। প্রয়াত সাংবাদিক মুসা আহমেদ বলে গিয়েছিলেন যে, ‘আওয়ামী লীগ দেখলেই বলবা চোর’। বদরউদ্দিন ওমর সাহেব কয়েকদিন আগে কলকাতার এয়ারপোর্টে একেবারে নাম ধরে বলেছেন চোর। এই যে মেগা প্রজেক্টগুলোতে হাজার হাজার কোটি টাকা লুট হয়ে যাচ্ছে। ব্যাংকগুলো থেকে হাজার কোটি টাকা নিয়ে গেছে। দেশের মানুষ খুব ভালো করে জানে, কারা দুর্নীতি করছে, কারা দুর্নীতি করছে না।”
খালেদা জিয়া ও গয়েশ্বর চন্দ্র রায়সহ নেতা-কর্মীদের মুক্তি দাবিতে এই প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে জাতীয় গণতান্ত্রিক অধিকার মঞ্চ নামের একটি সংগঠন।
‘যেনতেন নির্বাচন করতে’ সরকার খালেদা জিয়াসহ বিএনপির নেতা-কর্মীদের কারাগারে নিচ্ছে অভিযোগ করে দলটির মহাসচিব বলেন, ‘দেশনেত্রীর নামে ৪টি মামলা রয়েছে। আর প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ছিল ১৫টি। ১৫টি মামলা তুলে নিয়ে এই ৪টি রেখে দিলেন। আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে হওয়া ৭ হাজার মামলা তুলে নিয়েছেন। আর আমাদের মামলা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৮ হাজার। আসামির সংখ্যা এক মাস আগে পর্যন্ত ছিল ১৮ লক্ষের ওপরে। গোটা কারাগার ভরে গিয়েছে বিএনপির নেতা-কর্মীতে।’
‘কেন করছেন এগুলো। কারণ জানেন বিএনপির নেতা-কর্মী যদি বাইরে থাকে, মাঠে থাকে, জনগণের সঙ্গে থাকে, তাহলে আপনাদের কোনো আশা নেই। সে কারণে আবারও যেনতেন ও জোর করে নির্বাচন করার জন্য বিএনপি নেতাদের কারাগারে নিয়ে যাচ্ছে’, বলেন তিনি।
আওয়ামী লীগের ক্ষমতায় থাকার আইনগত ও নৈতিক কোনো অধিকার নেই বলেও মনে করেন মির্জা ফখরুল।
তিনি বলেন, তারা (সরকার) ক্ষমতায় টিকে থাকতে সব গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংস করছে। এই সংসদ জনগণের প্রতিনিধিত্ব করে না। কোনো বিরোধীদল নেই। বিরোধীদলীয় নেত্রী আকুতি করে বলছেন, আমাদের বাঁচান। আমরা জনগণের সামনে দাঁড়াতে পারছি না। সংসদে যে আইনগুলো পাশ হচ্ছে তাতে জনগণের কোনো প্রতিনিধিত্ব নাই। প্রশাসনের তাদের নিজের লোককে বসাচ্ছে। আর যারা একটু নিরপেক্ষ তাদের ওএসডি করে রাখা হয়েছে। বিচার বিভাগকেও ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে।
খালেদা জিয়াসহ নেতা-কর্মীদের মুক্তি ও একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের দাবি আদায়ে নেতা-কর্মীদের আরো বেশি ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান বিএনপির মহাসচিব।
‘আমাদের কাজ এখন খালেদা জিয়াসহ নেতা-কর্মীদের মুক্ত করে আনা। আরেকদিকে একটি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আদায় করার সংগ্রাম। আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হয়ে এই দানব সরকারকে পরাজিত করে সত্যিকার অর্থে একটি নিরপেক্ষ সরকার ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের অধীনে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।’
বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট নিপুন রায় চৌধুরীর সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য রাখেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লাহ বুলু, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মোহাম্মদ রহমত উল্লাহ প্রমুখ।
Blogger দ্বারা পরিচালিত.